গর্ভাবস্থায় চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ সময় । এই সময় মায়ের খাদ্যভ্যাস শুধু তার নিজের জন্য নয়। অনাগত সন্তানের সুস্বাস্থ্যর উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে । তাই কি খাবেন আর কি খাবেন না তা নিয়ে অনেক মা দোটানায় থাকেন । আজ আমরা জানবো গর্অভস্থায় চিনা বাদাম খাওয়ার কতটা উপকারী এবং এটি মা ও শিশুর স্বাস্থের উন্নতিতে ভূমিকা রাখে ।
চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা বাদামের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া চাহিদা সম্পর্কে
অনেকেই জানেন না । আজকে আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে জানাবো কাঁচা বাদামের
পুষ্টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং চাহিদা সম্পর্কে । চলুন বাদাম সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করা যাক ।
পেজ সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- চিনা বাদামের পুষ্টিগুণ ছোট বাদামে বিশাল শক্তি
- শিশুর মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে চিনা বাদামের ভূমিকা
- গর্ভবতী মায়ের শক্তি ও এনার্জি ধরে রাখতে চিনা বাদাম
- আয়রন ও ফোলেট রক্তস্বল্পতা রোধে চিনা বাদামের সহায়তা
- চিনা বাদাম কিভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- গর্ভাবস্থায় চিনা বাদাম খাওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি ও সতর্কতা
- পরিমিত চীনা বাদাম খাওয়াই স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থার চাবিকাঠি
গর্ভাবস্থায় চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরের নানা ধরনের শারীরিক ও হরমোনাল পরিবর্তন ঘটে
।এই সময়ে মায়ের খাদ্যভ্যাস শুধু তার নিজের জন্য নয় অনাগত সন্তানের সুস্থ
বিকাশে ও বড় ভূমিকা রাখে । তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার
অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি । চিনা বাদাম এই ক্ষেত্রে একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক
খাদ্য উৎস জা মা ও শিশুর জন্য নানা দিক থেকে উপকারী ।
চিনা বাদাম প্রোটিন ,ফোলেট ,আয়রন , ক্যালসিয়াম ,ভিটামিন ই,ওমেগা- 3ফ্যাটি
অ্যাসিড এবং নানা প্রকার মিনারেলে সমৃদ্ধ ।এ উপাদান গুলো গর্ভবতী মায়ের
শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায় শিশুর মস্তিষ্ক কোষ গঠনের সহায়তা করে এবং রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ।
এছাড়া চিনা বাদাম একটি সহজলভ্য সাশ্রয়ী খাবার , যা ব্যায়বহুল সাপ্লিমেন্টের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে ।তবে খাওয়ার পরিমাণমানে ভারসাম্য বজায় , রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ অতিরিক্ত গ্রহণে হজম বা আ্যালর্জি দেখা দিতে পারে ।সঠিক পরিমাণে খেলে চিনা বাদাম গর্ভ অবস্থায় মা ও শিশুর সার্বিক স্বাস্থ্য রক্ষায় একটি কার্যকর প্রাকিতিক পুষ্টিকর উপাদান হিসেবে কাজ করে।
চিনা বাদামের পুষ্টিগুণ ছোট বাদামে বিশাল শক্তি
চিনা বাদাম দেখতে ছোট হলেও এর ভেতরে লুকিয়ে আছে বিশাল পুষ্টিগুণের ভান্ডার । একে অনেক সময় পুওর ম্যানস প্রোটিন বলা হয় । কারণ এটি সহজলভ্য হলেও শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী পুষ্টি সরবরাহ করে । এতে রয়েছে প্রোটিন শিশুর কোষ টিস্যু ও মাংসপেশি গঠনের সহায়তা করে ।ফোলেট গর্ভ অবস্থায় শিশুর মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে অপরিহার্য ।
আয়রন মা শিশুর রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে । ভিটামিন ই ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা
করে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে । ওমেগা ৩ফ্যাটি অ্যাসিড শিশুর
মস্তিষ্কের বিকাশে অপরিহার্য ফ্যাট ।ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে ।
উপাদান গুলো একসাথে কাজ করে গর্ভবতী মায়ের শরীরকে করে তোলে আরো সবল ও শক্তিশালী
। এছাড়া এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে
যায় । এমনকি প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ চেনা বাদাম খেলে শরীরে এনার্জি লেভেল
বৃদ্ধি পায়। গর্বঅবস্থায় ক্লান্তি দূর করতেও সাহায্য করে । তাই একে ছোট
বাদাম বললেও এর পুষ্টিগুণ কিন্তু অনেক বড় ।
শিশুর মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে চিনা বাদামের ভূমিকা
গর্বঅবস্থায় শিশুর মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ শুরু হয় গর্ভধারণের প্রথম
কয়েক সপ্তাহ থেকে । এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মায়ের খাবারের পুষ্টিগুণ সরাসরি
প্রভাব শিশুর মানসিক ও বুদ্ধি বিত্তিক বিকাশে ।চিনা বাদাম এক্ষেত্রে চমৎকার
প্রাকৃতিক খাদ্য উৎস যা মা ও শিশু মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত উপকারী ।
চিনা বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট ও ওমেগা ও ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে ।এই দুই উপাদান
গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্কের কোষ গঠনও স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে । বিশেষ করে ফোলেট নিউরাল টিউব ডিফেক্ট প্রতিরোধ
সাহায্য করে যা শিশুর মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের বিকাশজনিত সমস্যা ।
এছাড়া চিনা বাদামের ভিটামিন ই ও ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কে অক্সিজেন
সরবরাহ বাড়ায় । যা শিশুর স্মৃতিশক্তি, শেখার ক্ষমতা ও বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়তা
করে ।নিয়মিত পরিমিত ও পরিমাণে চিনা বাদাম খেলে মায়ের শরীর পর্যন্ত পুষ্টি
পায়, ফলে শিশুর ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট আরও শক্তিশালী হয় ।
তবে যাদের চিনা বাদামে এলার্জি রয়েছে তাদের সতর্ক থাকতে হবে ।এক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে ফোলেট ও ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ অন্য খাবার যেমন বাদাম জাতীয় খাদ্য মাছ বা ডাল খাওয়া যেতে পারে । সঠিক পরিমাণে চিনা বাদাম গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের ডায়েটে রাখলে শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধি পায় ।যা ভবিষ্যতে তার মানসিক শিক্ষাগত বিকাশের জন্য মজবুত ভিত্তি তৈরি করে জন্য ।
গর্ভবতী মায়ের শক্তি ও এনার্জি ধরে রাখতে চিনা বাদাম
গর্ভাবস্থায় শরীরের ভেতরে নানা পরিবর্তন ঘটে হরমোনের উঠানা মা শিশুর বৃদ্ধি এবং
রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় । এর ফলে অনেক মা ক্লান্তি দূর্বলতা এনার্জি
কমে যাওয়ার সমস্যায় ভুগেন । এই সময় এমন কিছু খাবার প্রয়োজন যা শরীরকে
প্রাকৃতিকভাবে শক্তি যোগাবে চিনা বাদাম সেই প্রয়োজন পূরণের অন্যতম ।
চিনা বাদাম হল প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার । এতে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট যা শরীরে দীর্ঘশক্ষণ শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য
করে । এক মুঠো চিনা বাদামী মাকে সারাদিনের কাজে এনার্জি যোগাতে পারে।
এ ছাড়া চিনা বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন বি কমপ্লেক্স মায়ের শরীরে
এনার্জি মেটাবলিজম বাড়ায় যা ক্লান্তি কমাতে এবং মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা
করে । বিশেষ করে সকালে বা বিকেলে হালকা ক্ষুধা লাগলে এক মুঠো চিনা বাদাম খাওয়া
স্বাস্থ্যকর ও কার্যকর ।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল চিনা বাদামের ফ্যাট মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যার শরীরে
জমে থাকা অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট বাড়ায় না । বরং এটি হার্ট ও রক্তচাপের ভারসাম্য
বজায় রাখে ।ফলে মা যেমন শক্তি পান তেমনি সুস্থ থাকেন দীর্ঘদিন । তাই
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অল্প পরিমাণ চেনা বাদাম যোগ করলে তা শুধু
এনার্জি বাড়ায় না বরং সারাদিন শরীরকে করে তোলে হালকা চনমনে কর্মক্ষম ।
আয়রন ও ফোলেট রক্তস্বল্পতা রোধে চিনা বাদামের সহায়তা
গর্ব অবস্থায় অনেক নারীই রক্তস্বল্পতা বা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতিতে ভুগেন।
কারণ এই সময় শরীরকে মায়ের পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুর জন্যওঅতিরিক্ত রক্ত
উৎপাদন করতে হয় । ফলে আয়রন ও ফোলেটের চাহিদা বেড়ে যায় । এই ঘাটতি পূরণে চীনা
বাদাম হতে পারে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক সমাধান । চিনা বাদামে রয়েছে উল্লেখযোগ্য
পরিমাণ আয়রন যা শরীরের রক্তের লোহিত কণিকা তৈরিতে সহায়তা করে । এটি মায়ের
শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখে ,ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা শ্বাসকষ্টের
মত রক্তস্বল্পতার উপসর্গ কমে যায় ।
অন্যদিকে চিনা বাদামে থাকা ফোলেট শিশুর সঠিক কোষ ও মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে ফোলেটের অভাব হলে শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্ট হওয়ার ঝুকি বেড়ে যায় । তাই প্রতিদিন অল্প পরিমাণে চিনা বাদাম খাওয়া মায়ের শরীরে প্রাকৃতিকভাবে আয়রন ও ফোলেট সরবরাহ করে যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে এটি শুধু মায়ের রক্তের গুণমানই বাড়ায় না বরং শিশু স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে ।তবে মনে রাখতে হবে চিনা বাদাম কখনো ডাক্তার নির্ধারিত আয়রন বা ফোলেট সাপ্লিমেন্ট এর বিকল্প নয় । বরং এটি সেই পুষ্টি একটি প্রাকৃতিক সহায়ক উৎস হিসেবে কাজ করে ।
চিনা বাদাম কিভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে অনেক বেশি সমবেদনশীল হয়ে পড়ে । এ সময় শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয়ে যায় ,যাতে গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ও
বিকাশ ঠিকভাবে হতে পারে না ।কিন্তু দুর্বল ইমিউনা সিস্টেমের কারণে মা সহজে
ঠান্ডা কাশি ইনফেকশন বা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হতে পারেন । তাই এ সময় এমন খাবার
খাওয়া উচিত প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । বাদাম ঠিক সেই
কাজটাই করে ।
চিনা বাদামে রয়েছে ভিটামিন ই, জিংক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রোটিন যা একসঙ্গে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলে । বিশেষ করে ভিটামিন ই একটি
শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে
রক্ষা করে এর ফলে সংক্রমণ বা প্রবাহ জনিত সমস্যা কমে যায় ।
এ ছাড়া চেনা বাদামের জিঙ্ক ও ম্যাগনেসিয়াম শরীরের ইমিউন সেল বা
প্রতিরোধকারী সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে । নিয়মিত অল্প পরিমাণ চিনা বাদাম
খেলে শরীর প্রতিরোধ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হয় ।যা মা ও শিশুকে
বিভিন্ন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয় । আরো একটি বিশেষ দিক
হলো চিনা বাদামে থাকা হেলদি ফ্যাট শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা
বাড়িয়ে হৃদযন্ত্র ও রক্তনালীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখে ।ফলে সার্বিকভাবে
শরীরের ফাংশন ভালো ভাবে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি
পায়।
তবে খাওয়ার আগে মনে রাখতে হবে চিনা বাদাম সবসময় পরিমিত পরিমাণেও ভাজা বা সিদ্ধ
অবস্থায় খাওয়া উচিত ।অতিরিক্ত খেলে হজমে সমস্যা বা এলার্জি সম্ভাবনা
থাকতে পারে । সুতরাং প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা অল্প করে চিনা বাদাম যোগ করলে । এটি
শুধু পুষ্টিগুণই নয় বরং প্রাকৃতিকভাবে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার
দারুণ একটি উপায় হতে পারে ।
গর্ভাবস্থায় চিনা বাদাম খাওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি ও সতর্কতা
যদিও চিনা বাদাম একটি পুষ্টিগুনে ভরপুর খাবার, তবু গর্ভাবস্থায় এটি
খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা ও সীমাবদ্ধতা মেনে চলা জরুরী । কারণ সবার
শরীরে গঠনও প্রক্রিয়া এক নয় । তাই যা একজনের জন্য উপকারী অন্যজনের জন্য তা
ক্ষতিকর হতে পারে । চিনা বাদাম অনেকে শরীরে এলার্জি প্রক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে
। যা গর্ভ অবস্থায় বিশেষভাবে বিপদজন লক্ষণ গুলির মধ্যে থাকতে পারে ত্বকের
চুলকানি ফুসকুড়ি শ্বাসকষ্ট বা ফোলা ভাব যদি আগে থেকে চিনা বাদামে এলার্জি থাকে
তবে গর্ভাবস্থায় একদমই খাওয়া উচিত নয়।
অতিরিক্ত খাওয়া হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে । চিনা বাদামে উচ্চমাত্রায়
চর্বি ও প্রোটিন থাকায় এটি একসঙ্গে বেশি খেলে গ্যাস বুক জ্বালা বমি ভাব বা
হজমের সমস্যা হতে পারে । গর্ভাবস্থায় যাদের এসিডিটি অম্লতা বেশি
তাদের জন্য অতিরিক্ত চিনা বাদাম খাওয়া অস্বস্তিকর হতে পারে । বাজারে পাওয়া অনেক
চিনা বাদামে অতিরিক্ত লবণ বা তেল ব্যবহার করা হয় যার রক্তচাপ ওজন বাড়াতে পারে ।
তাই চেষ্টা করবেন অলবণাক্ত বা হালকা ভাজা চিনা বাদাম খেতে ।
বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাঅবস্থায় প্রতিদিন প্রায় 20 থেকে 30 গ্রাম (এক মুঠো) চিনা বাদাম খাওয়া নিরাপদ এর বেশি খেলে ওজন বৃদ্ধি বা ক্যালোরি ওভারলোডের ঝুঁকি থাকতে পারে । যদি আগে থেকে এলার্জি ডায়াবেটিস বা হজম জনিত সমস্যা থাকে তবে চিনা বাদাম খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত । এতে সম্ভাব্য ঝুঁকি অনেকাংশে এড়ানো যায় । চিনা বাদাম গর্ভাবস্থায় একটি পুষ্টিকর উপকারী খাবার হলেও এর পরিমাণ ও মান ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । নিয়মিত খেলে এটি মা ও শিশুর জন্য আশীর্বাদ আর অতিরিক্ত খেলে হতে পারে অস্বস্তির কারণ ।
উপসংহারঃ পরিমিত চীনা বাদাম খাওয়াই স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থার চাবিকাঠি
গর্ভাবস্থায় একটি অন্যান্য ও সংবেদনশীল সময় যেখানে প্রতিটি খাবারের প্রভাব মা ও
অনাগত শিশু স্বাস্থ্যের ওপর পড়ে । চিনা বাদাম একটি সহজলভ্য সাশ্রয়ী এবং
সহজলভ্য খাদ্য যা গর্ভবতী মায়ের জন্য অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা এনে দিতে
পারে । এতে থাকা প্রোটিন ,ফোলেট , আয়রন ,ক্যালসিয়াম ভিটামিন ই উপাদান মা
ও শিশুর দেহ গঠন মস্তিষ্কের বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে ।
তবে মনে রাখতে হবে যে কোন খাবারের মতোই চিনে বাদাম ও পরিমিত পরিমাণে খাওয়িই
সবচেয়ে নিরাপদে ও উপকারী । অতিরিক্ত খেলে যেমন হজমের সমস্যা হতে পারে তেমনি
এলার্জির ঝুকি ও বাড়তে পারে । তাই দৈনিক এক মুঠো চীনা বাদামি
যথেষ্ট বিশেষ করে যদি তা ভাজা বা অলবণাক্ত
অবস্থায় খাওয়া হয়। সবশেষে গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনার
আগে অবশ্যই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরী সঠিকভাবে পরিকল্পিত ও
পুষ্টিকর ডায়েটি্তেই হতে পারে একটি সুস্থ নিরাপদ ও সুখী মাতৃত্বের মূল চাবিকাঠি
।

সফটনোরি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url